1. admin@banglawebs.com : banglawebs :
  2. shohaghsandwipi@gmail.com : Shohagh_Sandwipi :
রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

চাঁদাবাজীতে অতিষ্ঠ সন্দ্বীপ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের জেলেরা।

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩
  • ১৩১ Time View

নীরব চাঁদাবাজীর শিকারে দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সন্দ্বীপ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের জেলে পল্লীর জেলেরা।দেশ ছাড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেক পরিবার। সন্দ্বীপ রহমতপুর ইউনিয়ন সংলগ্ন দলই পাড়ার উত্তর দিকে শ্রী শ্রী আনন্দয়ী কালিবাড়ি সংলগ্ন জেলে বাড়ি থেকে শুরু করে হরিশপুর রহমতপুর সংযোগ ব্রীজ সংলগ্ন জেলে পরিবার গুলো সহ কেন্জাতলী বাজারের উত্তর দিকের জেলে বাড়ির সকল বাসিন্দারা পর্যায়ক্রমে এই চাঁদা বাজির শিকার হচ্ছেন।কারো ছেলে মেয়ের বিয়ে শাদীর অনুষ্ঠান হবে চাঁদা দাও,কেউ নতুন ঘর দেবে চাঁদা দাও,কেউ বিদেশ থেকে আসলো চাঁদা দিন,নিজেের মাঝে ঝগড়া বিবাদ হয়েছে দুই পক্ষই তখন চাঁদা দিতে হবে এসব চাঁদাবাজদের।সেই চাঁদার পরিমান তাও ১ লক্ষ থেকে শুরু করে সর্ব নিন্ম ৫ হাজার পর্যন্ত।একেবারে সামর্থ নেই চা খরচ বাবদ নুন্যতম ২ হাজার।

স্থানীয় জেলেদের ভাষ্যমতে,এই সমস্ত চাঁদাবাজদের খল নায়ক বিএনপি সমর্থিত ক্যাডার বাবলু,পিতার নাম ছবি সর্দার।প্রায় ৮ থেকে ১০ টি মামলার আসামী সে। তার দলীয় বা রাজনৈতিক দুর্বলতার কারনে সে দোসর হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে এরশাদ,মামুন,ফারুকসহ বেশ কয়েকজনকে।।এরশাদের পিতার মানিক চৌকিদার,মামুনের পিতার নাম হুমায়ুন,ফারুকের পিতার নাম সওদা।এছাড়া আরো একাধীক আওয়ামী পন্থী ক্যাডার ও এক আওয়ামীলিগ নেতার কিশোর সন্তানকেও কাজে লাগাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে জানান,গত বছর চাঁদা দিতে অস্বীকার হওয়ায় বার বার মারধরের পর স্থানীয় সুবাস জলদাসের পরিবারের সবাই সহ ৯ মাসের সন্তান সম্ভবা গর্ভবতী এক পুত্রবধুকে নিয়ে রাতে পালিয়ে আশ্রয় নেন পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ডের এক আত্মীয় বাড়িতে।ভয়ে তটস্থ পুরো পরিবার।পরে এক সংবাদ কর্মীর দ্বারস্থ হলে তার সহযোগিতায় রহমতপুর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা প্রদানের অঙ্গীকার দিয়ে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বাড়িতে নিয়ে পৌঁছে দেয়।এভাবে অনেকে নীরবে ভয়ে আইনের সহযোগিতা না নেওয়ার কারনে ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।পড়ে তারা অন্যদের টার্গেট করে।

গত ৪ মাস পুর্বে চট্টগাম থেকে আসা জয়দেব নামে এক জলদাসের বাড়িতে গিয়ে চাঁদা চাইতে গিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকী ও অস্ত্র প্রদর্শন করলে তারা ঘর থেকে না বেড়িয়ে সব হুমকি ধামকি ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করে মোবাইল ফোনে।এবং সেই ভিডিও সামাজিক যাগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে কিছুদিন তাদের দৌঁড়াত্য বন্ধ থাকলেও সদ্য অনুষ্ঠিত ঈদুল আজহার দুইদিন পরে তুচ্ছ বিষয়কে সাজিয়ে স্থানীয় নিতাই জলদাস ও তার ছেলে প্রান্ত থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং পিতা পুত্র ২ জনকে ব্যাপক মারধর করে।তারাও ভয়ে বিচার চাইতে পারেনি।

এসব ঘটনার জন্য কেউ বিচারমুখী হতে চাইলে আবার তাদের অনুগত জেলে সর্দার যোগেশ জলদাস বিভিন্ন নেগেটিভ মন্তব্য ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে উল্টো তাদের দমিয়ে রাখে বলে অভিযোগ করেন হারাধন জলদাস।সে বলেন তার আচরনে মনে হয় শর্ষের ভেতর ভুত লুকিয়ে থাকে।

এরপর গত ৮ জুলাই ছিলো পুলিন জলদাসের ছেলে প্রদীপ জলদাসের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান।তার বিয়ের খবর শুনার পর থেকে সেইসব ক্যাডাররা বিভিন্ন ছুতোয় তাদের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবী করে।তারা প্রথমে কিছুটা সাহস নিয়ে থাকলেও পরে ৫ হাজার টাকা হাতে তুলে দেয়।তাতে সন্তুষ্ট নয় তারা।কম টাকা বলে হুমকী ধামকী দিয়ে টাকা জোগার করার আল্টিমেটাম দিয়ে চলে যায়।কিন্তু টাকা না দেওয়ায় গায়ে হলুদ শেষে রাত প্রায় ২ টার দিকে এসে বাবলুসহ কয়েকজনে বিয়ে বাড়ির গেইটের পাশের পকেট গেইট,সাজানো বিমান ও ফুলসহ বিভিন্ন ডেকোরেশন সামগ্রী ভেঙ্গে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ তালতলীর ডেকোরেশন ব্যবসায়ী ফারুকের করা থানায় মৌখিক অভিযোগে ভোর রাতে ঘটনার মুল হোতা বাবলুকে এরেষ্ট করে নিয়ে যায় পুলিশ।কিন্তু সবার আতংক ২/৩ দিন পর সে বেড়িয়ে এসে আবারো চাঁদাবাজি ও নির্যাতন শুরু করবে।

অপর দিকে আরেক চাঁদাবাজ ও ক্যাডার তাহের।তার পিতার নাম আতিক সওদাগর।সে এলাকায় চাঁদাবাজি নারী নির্যাতন কিডন্যাপসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত।গত বছর জানুয়ারীর ৬ তারিখ হারাধন জলদাসের ছোট ছেলেকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়ার কয়েকঘন্টা পর মিন্টু মাষ্টারের সহযোগিতায় পাশের জঙ্গল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।এই নিয়ে তার বিরুদ্ধে শিশু অপহরনের একটি মামলা হয়।মামলার সাক্ষি রয়েছেন মিন্টু মাষ্টার নিজেও।কিন্তু তাহেরের অপকর্ম তাও থামেনি।এই তাহেরেট কারনে হারাধনের বিবাহিত মেয়ে পিতার বাড়িতে বেড়াতে আসতে পারেনা।গত ১৬ মে ২০২৩ তার মেয়ে বাবার বাড়ি নাইয়ুর বা বেড়াতে আসলে তার মেয়েকে তুলে নেওয়ার জন্য সে তাদের বাড়িতে আসলে তারা মোবাইলে সব রেকর্ড করছে দেখে চিৎকার চেঁচামেচি ও হুমকি দিয়ে চলে যায়।এরপর প্রবাসী সজিব দাস পিতা মলিন দাস ওমান থেকে আসার পর তার থেকে ৩০ ত্রিশ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে যায়।তার আগে তাকে মারধর সহ বিভিন্ন হুমকির কারনে সে চাঁদা দিতে বাধ্য হয়েছিলো।

আরেক হারাধন জলদাস ও চাতকী বালা দুইজন একই বাড়ির নারী পুরুষ নিজেদের পুকুরে গোসল করতে গেলে তাহের সেখানে এসে হাজির হয়ে গল্প সাজায় তারা অপকর্ম করছে।পরে তাদের থেকে চাঁদা নিয়ে চলে যায়।অনিল জলদাসের ঘরে তার এলাকার মানষিক প্রতিবন্ধী এক নাতনী এসে ঘরে তরকারী কুটছিলো।এমন সময় তাহের তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে এসে ঘরে অপরিচিত মেয়ে এনেছিস কেন বলে কুৎসা রটাতে থাকে।অনিলের ছেলে গোপাল তখন বললো আমার ভাগনি আমাদের বাড়িতে আসতে পারবেনা?তোদের সমস্যা কোথায় এই নিয়ে তারা অনিলের ছেলের উপর ক্ষেপে গিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দিলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা শওকত তার বিচার করে তাকে হুশিয়ারী প্রদান করে ছেড়ে দেয়।এক কথায় সহজ স্বাভাবিক বিষয়কে রিউমার ছড়িয়ে আপত্তিকর করে তোলে তারা এবং ভুয়া অভিযোগ তৈরি করে চাঁদা দাবীর একেকবার একেক পথ তৈরি করে।

অন্যদিকে স্থানীয় কাউন্সিলর মোক্তাদের মাওলা ফয়সালের নিকট জেলেদের শতাধীক মামলা থাকলেও কোন মামলার সমাধান বা শালিসী বৈঠক না করার অভিযোগ তাদের।তারা বলেন,আমাদের শালিস না করে তিনি আমাদের সব সময় থানায় মামলা করতে বলেন।নিজে জনপ্রতিনিধি হয়ে সেগুলো না করার কারনে মেয়র মাক্তাদের মাওলা সেলিমের সাথেও মানষিক দ্বন্দ চলছে তার।

এ বিষয়ে মেয়র সেলিম জেলেদের এসব জায়গা সংক্রান্ত বিষয়সহ বিভিন্ন মামলার দায়িত্ব কাউন্সিলরকে দিয়ে হতাশ।সে কোন বিচার করেনা এবং স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের ও কোন কাজে সম্পৃক্ত করেনা।

জেলেরা আরো বলেন,থানায় মামলা করলে আমরা জেলেরা অশিক্ষিত এবং সহজ সরল বলে দুই পক্ষকে ভুয়া ওয়ারেন্ট হয়ে গেছে বলে পুলিশ দিয়ে ফোন করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।এভাবে দুই পক্ষের ২/৪ লক্ষ টাকা গচ্ছা যায়।সব মিলিয়ে প্রতিনিয়ত আনন্দময়ী কালি বাড়ী সংলগ্ন চায়ের দোকানে এসব সন্ত্রাসীদের আড্ডা ও বিভিন্ন ভীতিকর শব্দ ব্যবহার,হুমকি ধামকীতে অতিষ্ট হয়ে অনেক পরিবার দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন।

জেলেরা বলেন,আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারলে আগামী ১/২ বছরে আমাদের এলাকা জেলে শুন্য হয়ে যাবে।আমরা আওয়ামী রাজনীতি করি,ভোটকেন্দ্রে আমাদের নারী পুরুষদের দিয়ে লম্বা লাইন দেখিয়ে সুস্থ, সুন্দর নির্বাচনের ক্রেডিট নেওয়া হয়।দলীয় সভা সেমিনার জেলে সম্প্রদায় ছাড়া জমেনা।সব কিছুতে আমরা ব্যবহার হই,আবার চাঁদাবাজি ও শারীরিক জুলুম চলে আমাদের উপর।যা মেনে নেওয়া যায়না।তাই হয়তো একটি বড় আন্দোলন করবো নয়তো এটাকে নিয়তি ভেবে দেশ ছেড়ে চলে যাবো।তার আগে এমপি মাহফুজুর রহমান মিতা,স্থানীয় প্রশাসন,পৌর মেয়র মোক্তাদের মাওলা সেলিমসহ সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category